কুটির শিল্প বলতে পরিবারের সদস্যদের প্রাধান্য বিশিষ্ট সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বুঝায় যেসব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয়সহ ৫ লক্ষ টাকার নিচে এবং পারিবারিক সদস্য সমন্বয়ে সর্বোচ্চ জনবল ১০-এর অধিক নয়। সাধারণত স্বামী-স্ত্রী, পুত্র-কন্যা, ভাই- বোন ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সহায়তায় কুটির শিল্প পরিচালিত হয়। তারা পূর্ণকালীন ও খণ্ডকালীন সময়ে উৎপাদন বা সেবা কাজে জড়িত থাকে।
বাংলাদেশের কুটির শিল্পের উপযুক্ত ক্ষেত্র
ছোট জায়গা, স্বল্প মূলধন, ব্যক্তিগত নৈপুণ্য ও সৃজনশীলতা, কারিগরি জ্ঞান এবং পারিবারিক সহযোগিতার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে কুটির শিল্প। নানা রকমের কুটির শিল্প আমাদের দেশকে করেছে সমৃদ্ধ। বিভিন্ন অঞ্চলের কুটির শিল্প এত বেশি সুনাম অর্জন করেছে, যার কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল সে অঞ্চলের কুটির শিল্পের নামে পরিচিতি লাভ করেছে। যেমন- রাঙ্গামাটি কুটির শিল্প, মনিপুরি কুটির শিল্প, কুমিল্লার খদ্দর ইত্যাদি। নিম্নে বাংলাদেশের কুটির শিল্পের উপযুক্ত ক্ষেত্রের একটি তালিকা দেয়া হলো—
কুটির শিল্পের ধরন | উৎপাদিত দ্রব্যাদি |
পাটজাত শিল্প | স্কুল ব্যাগ, শিকা, দেয়াল মাদুর, পাটের স্যান্ডেল, কার্পেট |
বাঁশ ও বেত শিল্প | বেতের ঝুড়ি, বাল্ব শেড, চায়ের ট্রে, বেতের চেয়ার, দোলনা, পুতুল, ঝুড়ি, ফুলদানি, চাটাই, ডালা, কুলা, চালুন |
মৃৎ শিল্প | বিভিন্ন ধরনের জীবজন্তু, ফল, ফুল, তৈজসপত্র, শোপিস, পুতুল, ফুলদানি, ফুলের টপ, হাঁড়ি, কলসি ও অন্যান্য সামগ্রী |
তাঁত ও বস্ত্র শিল্প | শাড়ি, লুঙ্গি, টেবিল ক্লথ, সোফার ক্লথ, জামদানি, সোয়েটার, ব্যাগ, মাফলার, সুতার টুপি, ওয়ালম্যাট, চাদর, গামছা, শীত বস্ত্র, রেডিমেড গার্মেন্ট, হোসিয়ারি। |
খাদ্য ও সহায়ক শিল্প চা | নাচুর, জ্যামজেলি, মধু, গুড়, রসগোল্লা, মিষ্টি, দধি, চিপস, সেমাই, কনফেকশনারি |
হস্ত শিল্প | হাতের শিল্প কার্পেট, সতরঞ্চি, নকশিকাঁথা, অফিস স্টেশনারি, ও বুক , বাইন্ডিং, মাছ ধরার জাল, মাদুর, মিষ্টির প্যাকেট |
ঝিনুক শিল্প | ঝিনুকের মালা, অলংকার, খেলনা, শোপিস, |
ক্ষুদ্র ইস্পাত ও প্রকৌশল শিল্প | দা, কোদাল, খুন্তি, কাঁচি, সুরমাদানি, রেডিও-টেলিভিশন ও ফ্রিজ মেরামত, ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ, বালতি-ট্রাক তৈরি, মটর সাইকেল, জিপ, ট্রাক ও বাস মেরামত। |
কেমিক্যাল, ফার্মাসিউটিক্যালস শিল্প | ব্যবহারিক তৈল, আতর, গোলাপজল, আগরবাতি, মোমবাতি, ওয়াশিং সোপ, ফিনাইল |
আরও দেখুন...